অন্তদাহের দিনগুলো




মনে পড়ে খুব অন্তরাত্মা দিয়ে আমি ভালোবাসার চর্চা করতে করতে অগ্রসর হয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিপক্ষ কিংবা অপর পক্ষ আমার এই ভালোবাসায় আস্থা স্থাপন করতে না পেরে আমাকে আঘাত দিতে লাগল। আমি অনিচ্ছায় প্রেম প্রত্যাখ্যান করলাম। তার পর থেকেই আমি একাকী এটা বুঝতে শিখেছি। আমার একাকিত্ব আমাকে সব ব্যাপারে সতর্ক করলেও ভালোবাসার ব্যাপারে উদারতা দেখিয়েছিল। আমি এই উদারতা ঠিকমতো হজম করতে পারিনি। যদিও জানতাম পরিণাম মন্দ হবে, তবুও আমি প্রেমের চর্চা ছাড়িনি। আমি জানি না ভালোবাসার পুরস্কার কী। না জেনেই ভালোবেসে যাওয়া একটা অনিশ্চিত বিপজ্জনক কাজ। আক্ষেপের বিষয়, এ কাজে আমি দক্ষ হয়ে উঠেছি। আর এই দক্ষতা থেকে জন্ম নেয় দুঃখবোধ আর বিষাদের বিস্তৃত আকাশ। সেই আকাশ আবার শূন্যতায় ভরা।



জানি কিছুই ফিরে আসে না। কিছুদিন ব্যাকুলতায়-ভাবনায় কয়েকটি দিবস অতিবাহিত হয়ে যায়। সবকিছু স্মৃতিতে-বিস্মৃতিতে আপ্লুত হয়ে ভেসে গেছে। মনে হয় আমি সুদূরের যাত্রী। বহুদূর পথ পাড়ি দিয়েছি।

কিন্তু সব সময় মনে হয় আমার পাশে একজন ছিল। কোথায় তাকে রেখে এলাম, কখন রেখে এলাম, কীভাবে ভুলে গেলাম। এটা একটা বিস্ময়ের ব্যাপার বটে। মাঝে মধ্যে বলি, আমি তো আছি। প্রকৃতির মধ্যে যেমন লতাগুল্ম বাতাসে দোল খায়, আমিও তেমনি দুলছি। আমার চক্ষু বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে আমারই অশ্রু-জল। কার যেন কাজলমাখা দুটি চোখ আমাকে নিয়ত দেখছে। কিন্তু তার কণ্ঠস্বর শুনতে পাই না। ভুলতে পারি না তার হাসি, বিদ্রূপ এবং কৌতুকের কলরব। সেই বিস্মৃত কিংবা অচেনা মুখটির কথা ভেবে সাহস পাই শূন্যতা থেকে কিছু একটা সৃষ্টি করতে। শিল্পীর সাদা ক্যানভাসের মতো চিন্তাও তখন থাকে শূন্য। সেখানে আমি এঁকে চলছি অবিরাম রেখামালা।


সংগৃহীত

No comments: